শিরোনামঃ
শিরোনামঃ
দীঘিনালায় মাইনী নদীর ছড়ায় পড়ে নিখোঁজের দুই দিনপর বৃদ্ধার মরদেহ উদ্ধার কেশবপুর থানার এস আইকে প্রকাশ্যে জামায়াত নেতার হুমকিআটকের এক ঘন্টার মধ্যে জামিন লাভ কুষ্টিয়ায়পৃথক স্থানে দুই নারীর মরদেহ উদ্ধার চরফ্যাসনেগণঅভ্যূত্থানদিবস উপলক্ষে বিএনপির বিজয় মিছিল ও জনসমাবেশ বসুন্ধরায় ‘ষড়যন্ত্রমূলক’ বৈঠকের ঘটনায় মেজর সাদেকের স্ত্রী সুমাইয়া জাফরিন গ্রেপ্তার কেশবপুরে ধর্ষনের চেষ্টার প্রতিবাদে মানববন্ধন জুলাই ঘোষণাপত্র প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা গণ অধিকার পরিষদের — আলোচনার দাবিতে স্পষ্ট অবস্থান মোল্লাহাটে ১টি শিশু বিদ্যালয় মাঠে ডাস্টবিনের নোংরা পানি জমাট বাঁধা! গজারিয়ায় থ্রি-অ্যাঙ্গেল শিপইয়ার্ডে নির্মাণাধীন বিআইড ব্লিউটিসির-উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন কুষ্টিয়া কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়ন বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত
নোটিশঃ
আমাদের সাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। নিউজ শেয়ার করে আমাদের সাথে থাকুন।

কেশবপুরে ৩”হাজার পরিবার পানিবন্ধি অনাহারে দিন কাটছে,

হাফিজুর রহমান(যশোর)প্রতিনিধি
August 7, 2025, 2:49 pm

 

যশোরের কেশবপুর পৌরসভাসহ উপজেলার অধিকাংশ এলাকার পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা একেবারেই ভেঙে পড়েছে। হরিহর ও বুড়িভদ্রা নদীর নাব্যতা না থাকায়, অপরিকল্পিত মাছের ঘেরের কারণেই সামান্য বৃষ্টিতে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। উপজেলার অধিকাংশ নদী ও খালের কচুরিপানা অপসারন না করায় পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে হরিহর ও বুড়িভদ্রা নদীর উপচে পড়া পানিতে তলিয়ে গেছে পৌর এলাকাসহ উপজেলার অধিকাংশ নিম্ন অঞ্চল।

পানিবন্দি হয়ে পড়েছে পৌরসভা ও সদর ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের প্রায় ৩‘হাজার পরিবার। পানিবন্দি মানুষ বসত বাড়ি ছেড়ে যশোর-সাতক্ষীরা সড়কের পাশে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। এছাড়া তলিয়ে গেছে কেশবপুর পাইকারি কাঁচা বাজার, ধান হাট, হলুদ হাটসহ প্রধান প্রধান সড়ক গুলো।

অপরদিকে, উপজেলার ১১ টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় কৃষকের ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে থেমে থেমে হালকা ও মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে জানায় পানিবন্দি এলাকার মানুষজন।

জানা গেছে, কেশবপুর পৌর শহরসহ উপজেলার অধিকাংশ এলাকার বর্ষার অতিরিক্ত পানি হরিহর ও বুড়িভদ্রা নদী দিয়ে আপারভদ্রা নদীতে নিষ্কাশন হয়ে থাকে। এ তিনটি নদী পলিতে ভরাট হওয়ার কারণে গত বছর ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয় কেশবপুর বাসীকে। এছাড়া কেশবপুর শহরের আশপাশের নিন্মাঞ্চলের ৪ শতাধিক অপরিকল্পিত মাছের ঘের করার কারণে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। ফলে গত কয়েক দিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টি হওয়ায় কেশবপুর পৌরসভার আলতাপোল, মধ্যকুল, ভবানিপুর, সাহাপাড়া ও হাবাসপোল গ্রাম, সদর ইউনিয়নের মধ্যকুল, আলতাপোল, সুজাপুর, ব্যাসডাঙ্গা ও রামচন্দ্রপুর গ্রাম পানিতে তলিয়ে প্রায় তিন শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিন পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের আলতাপোল বিশ্বাস পাড়া, গাজি পাড়া, ঋষি পাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায় ঘরের মেঝেতে পানি উঠে গেছে, গাজি পাড়ার আবুল কালামের উঠান প্রায় ৩ ফুট পানিতে থই থই করছে। তার কাছে বন্যা সম্পার্কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে তার পরিবারসহ ওই এলাকার ২০টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। গত দুই দিন পানি আরো বৃদ্ধি পাওয়ায় তাদের মধ্যে অনেকে বাড়ি ঘর ছেড়ে যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের পাশে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে।
যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের পাশে আশ্রয় নেওয়া আলতাপোলের ঋষি পাড়ার গুরুপদ দাসের ছেলে মাদব দাস বলেন, গত কয়েক দিন ধরে পানিবন্দি হয়ে রয়েছি। গত সোমবার বসত ঘরের ভেতর পানি ওঠায় বাধ্য হয়ে রাস্তার পাশে আশ্রয় নিয়েছি।

পৌর এলাকার সরফাবাদ গ্রামের কয়েকজন কৃষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অপরিকল্পিত মাছের ঘের করার কারণে পানি নিষ্কাশনের বন্ধ হয়ে সামান্য বৃষ্টিতে তাদের বাড়ি ও ফসল পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে।
পাইকারি কাচা বাজারের ভাই ভাই বাণিজ্য ভান্ডারের মালিক মাহাবুর রহমান বলেন, হরিহর নদীর উপচে পড়া পানিতে কাচা বাজার তলিয়ে গেছে। এ কারনে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত সবজি এ বাজারে আনতে পারছে না। বাধ্য হয়ে ব্যবসায়ীরা মাইকেল মোড়ে নিয়ে গেছে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ড বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আলিম বলেন, তার ওয়ার্ডের হাবাসপোল, মধ্যকুল গ্রাম ও ১ নং ওয়ার্ডের ভবানীপুর গ্রামের অধিকাংশ বাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে।
কেশবপুর পৌর যুবদলের সদস্য সচিব মেহেদী হাসান বলেন, পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডে (আলতাপোল) দেড় শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে । কেশবপুরের প্রধান নদী হরিহর পলিতে ভরাট ও কচুরিপানা ভরে যাওয়ার কারণে পানি নিষ্কাশিত হতে না পারায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে মানুষের বাড়ি ঘরে উঠে এসেছে। দেড় শতাধিক পরিবার গত কয়েক দিন পানিতে আটকা থাকলেও পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা করা হয়নি। পানিবন্দিদের মধ্যে অনেকে সড়কের পাশে আশ্রয় নিতে শুরু করেছে। এ কারণে পানিবন্দি মানুষের মাঝে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে।
উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ও সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রভাষক আলাউদ্দীন আলা বলেন, তার ইউনিয়নের আলতাপোল, মধ্যকুল, সুজাপুর, ব্যাসডাঙ্গা ও রামচন্দ্রপুর গ্রামের দুই শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন পানি যে ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তা অব্যাহত থাকলে আরো অনেক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়বে।
কেশবপুর পৌরসভার সচিব এনামুল হক বলেন, হরিহর নদীর উপচে পড়া পানি পৌরসভার বিভিন্ন এলাকায় ঢুকে ২৫”শ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল্লাহ আল্ মামুন বলেন, গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতির পরিমান নির্ণয়ের জন্য বৈঠক চলছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী সুমন সিকদারের মোবইল ফোন বন্ধ থাকার কারনে এ ব্যাপারে তার বক্তব্য দেওয়া সম্ভব হয়নি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এরকম আরো নিউজ
এক ক্লিকে বিভাগের খবর