June 26, 2025, 11:24 am
শিরোনামঃ
শিরোনামঃ
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ৪ নং বটতৈল ইউনিয়নের সাবেক মহিলা সদস্য শিল্পী খাতুন এর বিরুদ্ধে,হাজারো মানুষের কাছ থেকে টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে হাঁড়িয়াঘোপ ওয়ার্ড বিএনপির প্রস্তুতি সভা কুষ্টিয়ায় বাধবাজারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উচ্ছেদ নোটিশের প্রতিবাদে মানব বন্ধন ও বিক্ষোভ ঠাকুরগাঁওয়ে কেমিস্টস এন্ড ড্রাগিস্টস ব্যাবসায়ীদের মানববন্ধন যশোরে ছেলের ধাওয়ায় বৃদ্ধ পিতা স্টোকে মৃত্যু মোল্লাহাট কে আর কলেজের নবনির্বাচিত সভাপতি শেখ ওয়াহিদুজ্জামান দীপু’র সংবর্ধনা কানসাটে ১১ কেজি গাঁজাসহ স্ত্রী আটক,স্বামী পলাতক দীঘিনালার মেরুং ইউনিয়নে দীঘিনালা সেনা জোনের বিনামূল্যে চিকিৎসা ক্যাম্প আগামি ২৪ ঘণ্টায় ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা, ডুবতে পারে দেশের ১০টি জেলা যশোর জজ কোর্টের পুলিশের কাছ থেকে পালিয়েছে হত্যা মামলার আসামি
নোটিশঃ
আমাদের সাইট ভিজিট করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। নিউজ শেয়ার করে আমাদের সাথে থাকুন।

ঝিনাইদহের শৈলকুপায় গুলিতে নিহত ৩ জনের মৃতদেহ উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার
June 26, 2025, 11:24 am

শুক্রবার রাতে প্রতিপক্ষ বন্দুকধারীরা দুই সহযোগীসহ পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির সামরিক কমান্ডার হানিফকে গুলি করে হত্যা করে। নিহতরা হলেন-নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির সামরিক কমান্ডার হরিণাকুন্ডু উপজেলার আহাদনগর

জাসদ গণবাহিনী ওই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ,  ঝিনাইদহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়া জানান। খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১২টার দিকে শৈলকুপা উপজেলার ত্রিবেনী ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর শ্মশান ঘাট এলাকার একটি ক্যানালের পাশ থেকে মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনজনের মাথায় গুলির চিহ্ন রয়েছে। পাশে দুইটি মোটরসাইকেল ও হেলমেট পড়ে ছিল।

গ্রামের রাহাজ উদ্দীনের ছেলে হানেফ আলী (৫২), তার শ্যালক একই উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের উম্মাদ আলীর ছেলে লিটন (৩৫) ও কুষ্টিয়া সদর উপজেলার পিয়ারপুর গ্রামের আরজাদ আলীর ছেলে রাইসুল ইসলাম (৪০)। একই স্থানে ২০০৩ সালের ৫ ডিসেম্বর ৫ জনকে হত্যা করা হয়।
নিহতরা হলেন-নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির সামরিক কমান্ডার হরিণাকুন্ডু উপজেলার আহাদনগর

নিহত হানিফ প্রায় দু’ডজন হত্যা মামলার আসামি। হরিণাকুন্ডুর কুলবাড়িয়া গ্রামের আলফাজ উদ্দিন হত্যা মামলায় তার ফাঁসির আদেশ হয়। উচ্চ আদালতেও ফাঁসির রায় বহাল থাকলে হাসিনা সরকারের সময় রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিশেষ ক্ষমা নিয়ে হানিফ এলাকায় ফিরে আসেন। এরপর থেকে তিনি হরিণাকুন্ডু উপজেলা মৎস্যজীবী লীগের সহ-সভাপতি হন এবং আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে এলাকায় প্রভাব প্রতিপত্তি বিস্তার করেন।

এলাকার বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, শৈলকুপার এই ট্রিপল মার্ডারের নেপথ্যে রয়েছে আলমডাঙ্গা উপজেলার ‘কায়েতপাড়া’ নামের একটি বিশাল বাওড়। ওই বাওড় হানিফ নিয়ন্ত্রণ করতেন। বাওড়ে কোটি টাকার ওপরে মাছও ছাড়া আছে। মৎস্যজীবী লীগ নেতা পরিচয়ে হানিফ বাওড়ে মাছ ধরা ও প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করলে এলাকার বিবাদমান একাধিক গ্রুপের মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়। ইতিমেধ্য বাওড়ে তিনদফায় মাছ ধরার তারিখ পরিবর্তন করা হয় এ বিরোধের কারণে। সেই সূত্র ধরেই হানিফসহ তার দুই সঙ্গীকে সমঝোতার প্রস্তাব দিয়ে ডেকে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হতে পারে বলে একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন।

এছাড়া ওই কায়েতপাড়া বাওড় নিয়ে গত ৩০ বছরে অর্ধশত মানুষ খুন হয়েছেন। হত্যার ধরন দেখে বোঝা যায়, তাদের কৌশলে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হরিণাকুন্ডুর সাধারণ মানুষের ভাষ্যমতে, হানিফ কুলবাড়িয়া গ্রামের আলফাজ উদ্দিন, তিওরবিলা গ্রামের লুৎফর রহমান, তাহেরহুদার আব্দুল কাদের ও পোলতাডাঙ্গার ইজাল মাস্টারসহ শতাধিক মানুষকে গুলি ও গলাকেটে হত্যা করে। এরমধ্যে ইজাল মাস্টারকে হত্যার পর তার মাথা কেটে উঠানে ফুটবল খেলে। এ হত্যাকাণ্ডটি সে সময় দেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।

এদিকে হানিফসহ তার দুই হত্যার দায় স্বীকার করে জাসদ গণবাহিনীর জনৈক কালু পরিচয় দিয়ে শুক্রবার রাত ৮টা ৫৪ মিনিটে গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠানো হয়। এছাড়া রাত ১টা ৬মিনিটে নিহত ৩ জনের ছবিও পাঠানো হয়।

জাসদ গণবাহিনীর নেতা পরিচয়ে জনৈক কালু হোয়াটসআপ বার্তায় দাবি করেন ‘এতদ্বারা ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা, কুষ্টিয়া, যশোর ও খুলনাবাসীর উদ্দেশ্যে জানানো যাইতেছে যে, পূর্ব বাংলা কমিউনিস্ট পার্টি নামধারী কুখ্যাত ডাকাত বাহিনীর শীর্ষ নেতা অসংখ্য খুন, গুম, দখলদারি, ডাকাতি, ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত হরিনাকুন্ডু নিবাসী মো. হানিফ তার দুই সহযোগীসহ জাসদ গণবাহিনীর সদস্যদের হাতে নিহত হয়েছেন। অত্রঅঞ্চলের হানিফের সহযোগীদের শুধরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হলো। অন্যথায় আপনাদের একই পরিণতির মুখোমুখি হতে হবে।’

এ ক্ষুদে বার্তা পেয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। এক পর্যায়ে রাত ১২টার দিকে তাদের মৃতদেহ রামচন্দ্রপুর ও পিয়ারপুর ক্যানালের পাশ থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। দীর্ঘদিন পর চরমপন্থিদের গুলির লড়াই ও গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে তার দায় স্বীকার করে বিবৃতি জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।

জানা গেছে, একই স্থানে গত ২০০৩ সালের ৫ ডিসেম্বর শৈলকুপা উপজেলার শেখপাড়া গ্রামের শহীদ খাঁ ত্রিবেনী গ্রামের শাহনেওয়াজ, একই গ্রামের ফারুক, নুরু কানা ও কুষ্টিয়ার ভবানীপুর গ্রামের কটাকে গুলি ও জবাই করে হত্যা করা হয়। ওই হত্যা মামলায় ২০২৪ সালের ২৯ অক্টোবর কুষ্টিয়ার আলী রেজা ওরফে কালু ও কুষ্টিয়া জেলার পিয়ারপুর গ্রামের মহসিন আলীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। ওই সময় ঝিনাইদহ জেলা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক মো. জাকারীয়াহ এ রায় দেন।

শৈলকুপা থানা চত্বরে কথা হয় নিহত হানিফের ছোট ভাই হরিণাকুন্ডু উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান সাজেদুল ইসলাম এশার সাথে। তিনি বলেন, ‘আমার ভাইকে বাড়ি থেকে মোবাইলে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। শুক্রবার বিকেলে তিনি মোটরসাইকেলে বাড়ি থেকে বের হন। এরপর থেকে আমার ভাইয়ের আর কোনো খবর জানতে পারিনি। রাত ১২টার দিকে জানতে পারি আমার ভাই হানিফ, তার শ্যালক লিটন ও অন্য সহযোগী রাইসুল ইসলামকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমি ভাইয়ের মৃতদেহ নিতে এসেছি। তবে যারা এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে আমি তাদের বিচার দাবি করছি।’

কুষ্টিয়া পিয়ারপুর গ্রামের নিহত রাইসুল ইসলামের মামা কামাল হোসেন বলেন, ‘রাইসুল ইসলাম ভালো ছেলে ছিলেন। সে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে গত দু’বছর আগে অনার্স মাস্টার্স শেষ করেছে। এরপর বন্ধু বান্ধবদের সঙ্গে ঘোরাফেরা করতো। সে কোনো দলের সঙ্গে জড়িত ছিল কিনা আমার জানা নেই।’

তবে কেন, কী কারণে এ হত্যা তা নিয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেনি পুলিশ। তারা হত্যার মোটিভ হিসেবে দু’দল চরমপন্থিদের বিবাদমানের কারণে এ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এরকম আরো নিউজ
এক ক্লিকে বিভাগের খবর