মোঃ আশরাফ ইকবাল পিকলু মাজমাদার
চোর সন্দেহে রিকশাচালককে মারধরের পর দেওয়া হয় নিজ পরিবারের জিম্মায়। এরপর নিখোঁজ, অতঃপর সকালে প্রতিবেশির বাড়ি থেকে লাশ উদ্ধার। অথচ রিকশাচালক সুরমান খান নিহত হওয়ার পেছনে পুরো দায় চাপল গ্রেপ্তার হাকিম ও তার স্বজনদের ওপর। এ অবস্থায় আলোচনায় আসছে নতুন ইস্যু। বুধবার দুপুরে পরিবারের জিম্মায় সুরমানকে ছেড়ে দেওয়ার পর ওই দিন সারারাত কোথায় ছিলেন তিনি? কেউ কেউ বলছে, চুরির মাল বন্ধুদের কাছ থেকে ফেরাতে গিয়েও খুন হতে পারেন সুরমান খান।
এদিকে সুরমান খানকে যে বুধবার দুপুরে পরিবারের জিম্মায় ছেড়ে দেওয়া হয় এবং পরে সুরমান শার্ট প্যান্ট পরে নিজ বাড়ি থেকে বের হন, এমন দৃশ্য অনেকেই দেখেছেন এলাকার। কয়েকজন শিশুও সময়ের কাগজকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
এর আগে চোর সন্দেহে মারধরের পর কুষ্টিয়া শহরের বাসিন্দা রিকশাচালক সুরমান খান মারা যান। বৃহস্পতিবার সকালে তার লাশ উদ্ধারের পর মামলা দায়ের, তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের দিন হাকিমের বাড়ি থেকে ১০ লাখ নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার চুরি হয়। হাকিম সন্দেহ করেন থানা মোড়ে তার হালিমের দোকানের কর্মচারী আশরাফুল এই চুরি করতে পারেন। আশরাফুল নিহত সুরমানের ছোটভাই। এর জের ধরে গত মঙ্গলবার সকালে আশরাফুলকে ধরে ত্রিমোহনী এলাকার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে আটকে মারধর করেন হাকিমের লোকজন। এ ছাড়া কারিবুল নামে ওই এলাকার আরেক যুবককেও একই অভিযোগে সেখানে নিয়ে মারধর করা হয়। পরে আশরাফুল নির্যাতনের মুখে তার ভাই সুরমানের নাম বলেন। ওইদিন রাত ১টার দিকে সুরমানকে ধরে হাকিমের বাড়ি নেওয়া হয়। সেখানে তাকে কয়েকদফা মারধর করে বুধবার সন্ধ্যায় স্বজনদের কাছে দেওয়া হয় সুরমানকে। এরপর বুধরাতে রাতে কোথায় ছিলেন সুরমান? কে তার গলায় গামছা পেঁচালো এসব প্রশ্নে দাঁনা বাঁধছে রহস্য।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন জানান, এ ঘটনায় অভিযুক্ত নিহতের প্রতিবেশি হাকিম, তার স্ত্রী ও মেয়েকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে ৯ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেছেন।
নিহতের স্বজন ও একাধিক এলাকাবাসী জানান, বুধবার সন্ধ্যা তারা এলাকায় উন্মুক্তভাবে দেখেছেন তারা। এরপর রাতভর তিনি নিখোঁজ ছিলেন।
সকাল ১০টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান। তিনি এলাকাবাসীকে ধৈর্য ধরার আহবান জানান।
এ সময় পুলিশ সুপার স্বজনদের বলেন, প্রকাশ্যে তাকে মারধর করা হলো কিন্তু আপনারা পুলিশকে জানাননি? এর কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি তারা।
সম্পাদকঃ এস এম এইচ ইমরান, প্রকাশকঃ আমেনা খাতুন ইভা
All rights reserved ©2017dailyaparadhchakra.com