বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালী জেলার কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের লোন্দা দাখিল মাদ্রাসায় প্রায় অর্ধশত বছরেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। জরাজীর্ণ ভবন, শৌচাগার, বিশুদ্ধ পানির অভাবসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষা কার্যক্রম প্রতিনিয়ত ব্যাহত হচ্ছে।
১৯৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত এই মাদ্রাসাটি ১৯৮৬ সালে এমপিওভুক্ত হয়। বর্তমানে এটি একটি একতলা ভবন ও দুটি টিনশেড ঘরের ওপর নির্ভরশীল। তবে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’-এর আঘাতে টিনশেড ঘর দুটির একটি সম্পূর্ণ ভেঙে গেছে এবং অপরটি অচল অবস্থায় রয়েছে। বর্তমানে তিন রুমের একতলা ভবনটিও জরাজীর্ণ অবস্থায় আছে।
শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা জানায়, মাদ্রাসার প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র, বৈজ্ঞানিক ল্যাবরেটরি, কমনরুম, শৌচাগার, গভীর নলকূপ এবং সঠিক যাতায়াত ব্যবস্থা নেই। পাকা সড়কের অভাবে বর্ষা মৌসুমে শিক্ষার্থীরা সময়মতো ক্লাসে আসতে পারে না।
দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান মীম বলেন, “গভীর নলকূপ না থাকায় বিশুদ্ধ পানি পেতে অনেক দূরে যেতে হয়। ভবনের অবস্থা এতটাই খারাপ যে আমাদের ক্লাস করতেও অসুবিধা হয়।”
নবম শ্রেণির মুনিয়া, লিমন ও সুমাইয়া মীম জানায়, “উত্তর ও পশ্চিম পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের ওপর সেতু বা কালভার্ট না থাকায় নৌকা বা বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এতে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়।”
স্থানীয় বাসিন্দা সোহেল খান ও সোহরাব আকন বলেন, “মাদ্রাসার ভবন খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলো সংস্কার করা হয়নি। দীর্ঘদিনেও কোনো উন্নয়ন হয়নি। আমরা নতুন ভবন নির্মাণের দাবি জানাই।”
মাদ্রাসার সুপার মো. আ. গফফার বলেন, “প্রতিষ্ঠানের শৌচাগার, গভীর নলকূপ, যাতায়াত ব্যবস্থা, ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের সমস্যাগুলো নিরসনের জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার দাবি জানিয়ে আসছি।”
এ বিষয়ে কলাপাড়া উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান খান বলেন, “সরকারি নির্দেশনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবন সংস্কার, নতুন ভবন নির্মাণ, আসবাবপত্র সরবরাহের বিষয়ে তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে। ২৬ জানুয়ারির মধ্যে প্রয়োজনীয় তথ্য জমা দিলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
উন্নয়নের ছোঁয়া বঞ্চিত এই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের নিরাপদ পরিবেশ ও আধুনিক শিক্ষা সুবিধা নিশ্চিত করতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন স্থানীয়রা।
