তৌহিদুর রহমান মোল‍্যাঃ

 ডিএমপির কোতোয়ালি থানার বাবুবাজারে সেতুর নিচে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা বসিয়ে ও পরিবহন স্ট্যান্ড বানিয়ে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে রমরমা চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। সরে জমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,স্থানীয় বিএনপি দলীয় নেতারা বুড়িগঙ্গা ২ নং সেতুর নিচে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গায় দলীয় প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে বিভিন্ন স্থাপনা বসিয়ে ও পরিবহন স্ট্যান্ড বানিয়ে দৈনিক লাখ লাখ টাকা চাঁদাবাজি করছে। ওই নেতারা সেতুর ১ থেকে ৭ নম্বর ব্লক পর্যন্ত গাড়ি পার্কিং এর জায়গায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ইজারা নীতিমালার শর্ত ভঙ্গ করে ট্রান্সপোর্ট,খাবার হোটেল, চায়ের দোকান,সিএনজি ও ঠেলাগাড়ির স্ট্যান্ড,ফলের দোকান ও মাস্কের বাজার  সহ বিভিন্ন পণ্যের দোকান বসিয়ে বেপরোয়া চাঁদাবাজি করছে। অপরদিকে ওই নেতারা ভাগাভাগি করে ব্রিজ ঘাট এলাকায় অবৈধ পরিবহন স্ট্যান্ড বানিয়ে জোর জুলুম ও শারীরিক নির্যাতন করে চাঁদা তুলছে তাদের  আরেকটি চক্র। স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, এই দুইটি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র কোতোয়ালি থানার সাবেক সভাপতি হায়দার আলী বাবলা ও ৩২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি’র সাবেক সভাপতি হাজী মোহাম্মদ তাইজু,সাধারণ সম্পাদক নাফিজ উদ্দিন ভূঁইয়া রিচার্ড,সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান ও স্থানীয় নেতা ইসরাফিল, কিবরিয়া মামুন ও বিল্লাল হোসেন পলাশ সহ আরো কয়েকজন। ব্রিজের পূর্ব পাশের ১ থেকে ৭ নম্বর ব্লক পর্যন্ত পার্কিংয়ের চাঁদাবাজি কোতোয়ালি থানার সাবেক সভাপতি হায়দার আলী বাবলা ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি হাজী মোহাম্মদ তাইজুর নেতৃত্বে টাইগার হাবিব,আলাউদ্দিন আলা ও খায়রুদ্দিন ভূঁইয়ার পরিচালনায় তসলিম,হোসেন দেলোয়ার হোসেন দেলু, ওয়াহেদ ও পাভেল সহ আরো দুই তিন জন চাঁদা  আদায় করে।তারা ট্রান্সপোর্ট প্রতি দৈনিক ৫ হাজার, খাবার হোটেল প্রতি ২  হাজার থেকে ৩ হাজার, চায়ের দোকান প্রতি দৈনিক ১ হাজার থেকে ১৫ শ,ফলের দোকান ৭শ থেকে ১৫শ, মাস্কের বাজারের প্রতি দোকান থেকে দৈনিক ৪শ জোরপূর্বক ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে চাঁদা নিচ্ছে। এছাড়া পিকআপ,কভার ভ্যান, ট্রাক,কন্টেইনার পার্কিং করিয়ে বিশ টাকার পরিবর্তে সর্বনিম্ন ৫শ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত জোরপূর্বক আদায় করছে।এভাবে এই বিএনপি দলীয় চক্রটি প্রতিদিন লক্ষাধিক টাকা চাঁদাবাজিও লুটপাট করছে। অপরদিকে ওই অবৈধ পরিবহন স্টান্ডে ৩২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাফিজ উদ্দিন ভুইয়া রিচার্ড, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান ও স্থানীয় নেতা ইসরাফিল, কিবরিয়া মামুন, ও বিল্লাল হোসেন পলাশের নেতৃত্বে চাঁদা তুলছে ভুইয়া নাজির, মোটা বাবু,কালা নাজির ও হিজলা বৃষ্টি সহ অজ্ঞাত নামা আরো ২-৩ জন। তারা পিকাপ,কভার ভ্যান,ট্রাক ও কন্টেইনার লোড আনলোডের জন্য পার্কিং করিয়ে সর্বনিম্ন ৩শ টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জোরপূর্বক আদায় করছে। প্রতিদিন মধ্যরাত থেকে শত শত পরিবহন পণ্য আনা নেয়ার জন্য এই স্ট্যান্ডে ভিড় করে।এছাড়া এই স্ট্যান্ডে দুইটি পরিবহন কোম্পানির ৩৫টি গণপরিবহন (বাস)এর প্রতিটি থেকে দৈনিক ৩শ টাকা করে জোরপূর্বক চাঁদা নিচ্ছে।স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে,ওই চাঁদাবাজদের মধ্যে হিজলা বৃষ্টিই সবচেয়ে দাপুটে  চাঁদাবাজ।সে ওইসব বিএনপি নেতাদের অত্যন্ত বিশ্বস্ত ও আস্থাভাজন চাঁদাবাজ।প্রতিদিন ভোর ৫ টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত এই চাঁদাবাজির বাজার খুবই জমজমাট থাকে। এভাবে বিএনপি’র সাইনবোর্ডধারী ওই নেতারা এই চাঁদা আদায়কারীদের দিয়ে প্রতিদিন লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগী পরিবহন শ্রমিকদের অনেকেই গোপনে এসব তথ্য দিয়েছেন।স্থানীয় দলীয় সাইনবোর্ডধারী উক্ত চাঁদাবাজরা অত্যন্ত প্রভাবশালী ও সন্ত্রাসী হওয়ায় তাদের এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কেহ মুখ খুলতে সাহস করে না। এসব বিষয় নিয়ে স্থানীয় কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এনামুল হাসান এর সাথে আলাপ হলে তিনি অপরাধ বিচিত্রার কাছে এসব বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান।তবে এখন যেহেতু জেনেছেন যেহেতু অপরাধীরা যতই প্রভাবশালী হোক তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বস্ত করেন।