সময়ের সাথে অনেক কিছুই বদলে যাচ্ছে। তাই আজকের দিনে আমাদের উচিত — মুখের মাইকের ভলিউম কমিয়ে, মনকে বড় করা।
সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, কিছু তথাকথিত “নেতা” মাইকের সামনে দাঁড়িয়েই সিংহের গর্জনের মতো গলা ফাটিয়ে চিৎকার শুরু করেন। যেন যত চিৎকার করবেন, তত বড় নেতা প্রমাণিত হবেন! অথচ, মানুষ এখন এই চিৎকারনির্ভর, নাটকীয় “হর্ন রাজনীতি” বুঝে ফেলেছে।
রাজনীতি এখন গলার জোরে নয়, যুক্তি, ভালোবাসা আর শান্ত ভাষায় মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নেওয়ার সময়।
অনেকেই আজ ভুলে গেছেন — চিৎকার করে মঞ্চ কাঁপালেও মানুষ বিরক্ত হয়। যেমনটা মানুষ বিরক্ত হতো শামীম ওসমান, নিক্সন চৌধুরী, কাউয়া কাকা, সাহারা খাতুন, মতিয়া চৌধুরীদের চিল্লানিতে। চিৎকার কখনোই নেতৃত্বের মানদণ্ড নয়।
এক সময় যখন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের পরিবারসহ বিএনপির শীর্ষ নেতাদের — তারেক রহমান, আরাফাত রহমান কোকো, খালেদা জিয়া, সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী, তরিকুল ইসলাম, মওদুদ আহমেদ আলহাজ্ব হাফেজ ইব্রাহিম, জয়নাল আবদীন ফারুক, মির্জা আব্বাস, ডঃ খোন্দকার মোশারফ হোসেন, ছাত্রনেতা আলহাজ্ব পটল, ছাত্রনেতা আমানুল্লাহ আমান, ছাত্রনেতা এনি, ছাত্রনেতা নাসির উদ্দিন পিন্টু, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, মিজানুর রহমান মিনু, সাংবাদিক আব্দুল মালেক মনি,বরিশালের সরোয়ার, আলতাব হোসেন চৌধুরী সহ বহু নেতাকর্মীকে সাজানো মামলায় জেলে পাঠানো হয়, তখন অনেক তথাকথিত বড় নেতার গলার আওয়াজ শোনা যায়নি। তৃণমূলের নেতাকর্মীরা আজ প্রশ্ন করছেন, সেই সময় কোথায় ছিল আপনাদের প্রতিবাদ কন্ঠ সাইফুর রহমান ও তৈয়বুর রহমান, মান্নান ভূইয়াদের পকেটে নাকি অন্য কোথায়?
অথচ, তখন কিছু সাহসী সাংবাদিক -সাংবাদিক চৌধুরীর নেতৃত্বে নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাজবন্দীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। কারাবন্দি তারেক রহমানের স্বাস্থ্যের খোঁজখবর,বন্দি কারাগারে অসুস্থ তারেক রহমানকে দুই দুইবার কাঁধে করে নিয়েছেন , সংবাদপত্র পৌঁছে দেওয়া, এমনকি কারা বিধি ভেঙে নামাজের জন্য তারেক রহমান ও বিএনপির কেন্দ্রিয় বড় বড় নেতাদিগকে মসজিদে নিয়ে যাওয়ার মতো মানবিক সহায়তা করেছেন-স্বৈরাচারের কারা কর্তৃপক্ষের কঠোর আইন তোয়াক্কা না করে, গোপনে মোবাইল ফোন দিয়েছেন নেতাদের পরিবারের সাথে কথা বলার জন্য । সেই সাংবাদিক চৌধুরী আজ নিপীড়নের শিকার,এটি কি সাহসী সাংবাদিকদের পাওনা -নেতাকর্মীদের কাছে প্রতিদান? আর ওই সময় থেকে শুরু করে কিছু মুখোশধারী দালাল লোক ইতিহাস ভুলে আবার গলা চেঁচিয়ে নেতা হওয়ার চেষ্টা করছেন।
তাই আজকের বার্তা পরিষ্কার: গলার আওয়াজ নয়, নেতৃত্ব আসে চরিত্র, সম্মান ও মানুষের প্রতি ভালোবাসা থেকে।
নেতাদের উচিৎ “হর্নের রাজনীতি” বন্ধ করে মানুষের সঙ্গে হৃদয়ের সংযোগ তৈরি করা।
সাথে সাথে বর্তমান সরকারের জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে এবং গণমাধ্যম কর্মীদিগকে খবরদারি না করে সহযোগিতা করে দেশকে এগিয়ে নিতে ইতিবাচক ভূমিকা রাখা।