ভোলার লালমোহন উপজেলার চর কচুয়ায় দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র— স্থানীয়ভাবে যাদের ‘আনিসুল গাজী বাহিনী’ নামে পরিচিত। এই বাহিনীর প্রধান আনিসুল হক গাজী ও তার পরিবারবর্গের বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা, চাঁদাবাজি, জমি দখল, নারী নির্যাতনসহ গুরুতর অভিযোগ থাকলেও, এখনো পর্যন্ত তাদের গ্রেপ্তারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
গত ৮ জুন রাতে দুই নম্বর ওয়ার্ডের কৃষক ফাহিম (পিতা: রুহুল আমিন হেজু) এর কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে আনিসুল হক গাজী ও তার সহযোগীরা। ফাহিম চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় লালমোহন থানায় এবং ভোলা জেলা আদালতে মামলা দায়ের হলেও এখনো প্রধান আসামিরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।
এছাড়া, গত ৭ জুলাই দুপুরে জমি নিয়ে চলমান শালিশ বৈঠকে আনিসুল হক গাজী, তার ছেলে আরিফ, রাকি, সাকিলসহ পরিবারের একাধিক সদস্য ধারালো অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হঠাৎ হামলা চালায়। এতে গুরুতর আহত হন হুমায়ুন (পিতা: মৃত হাবিবুল্লাহ), ফরিদ ও হারুন (পিতা: তোফাজ্জল হোসেন)।
স্থানীয় জমির মালিক ও কৃষকদের অভিযোগ— আনিসুল হকের নেতৃত্বে একটি সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক দীর্ঘদিন ধরে পুরো চর এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করে রেখেছে। চাঁদা না দিলে জমিতে চাষ করতে দেওয়া হয় না, প্রতিবাদ করলেই নেমে আসে নির্যাতন। এমনকি, নিজের দোষ ঢাকতে শালিশে অংশ নেওয়া নিরীহ কৃষকদের বিরুদ্ধে লালমোহন থানায় মিথ্যা মামলা দায়ের করেছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।
প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী প্রশ্ন তুলছেন— একাধিক মামলা থাকা সত্ত্বেও কেন এখনো আনিসুল গাজী বাহিনী ধরাছোঁয়ার বাইরে?
চর কচুয়ার শত শত সাধারণ মানুষ অবিলম্বে এই বাহিনীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।