বোনকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় যুবককে খুঁটিতে বেঁধে নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
ঘটনাটি ঘটেছে গত শুক্রবার সকালে চরফ্যাসন উপজেলার চরমাদ্রাজ ইউনিয়নের মিয়াজানপুর গ্রামের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের তালুকদার চৌরাস্তা এলাকায়। চার দিন পর সোমবার (৭ জুলাই) নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাটি জানাজানি হয়।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জাহিদুল অভিযোগ করে জানান, প্রতিবেশী যুবক তুহিনের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব ছিল। সেই সুবাদে তুহিন তাদের বাড়িতে যাতায়াত করত। একসময় তুহিন তার নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া ছোট বোনকে স্কুলে যাওয়া-আসার পথে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে উত্ত্যক্ত করতে শুরু করে। বিষয়টি বোন পরিবারকে জানালে জাহিদুল বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিন্ন করেন। পরে তুহিন ওই কিশোরীকে বিয়ের প্রস্তাব দেন, যা প্রত্যাখ্যান করা হলে ক্ষিপ্ত হন তিনি।
পরে শুক্রবার ভোরে তুহিন ‘একটি সমস্যার’ কথা বলে জাহিদুলকে ফোনে ডেকে নেন তালুকদার চৌমুহনী এলাকায়। সেখানে তুহিন ও তার সহযোগীরা ইমন তালুকদার, আমিনুল ইসলাম ও মো. সিদ্দিক জাহিদুলকে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন চালান। তারা ফ্লাশ লাইট দিয়ে হাত-পায়ের নখ তুলে ফেলেন এবং নির্যাতনের ছবি ও ভিডিও মোবাইলে ধারণ করেন। পরে তাকে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টাও করা হয়।
ঘটনার খবর পেয়ে জাহিদুলের বাবা মাজেদ রাড়ী স্থানীয় গ্রাম পুলিশ বজলু রহমানের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে চরফ্যাসন হাসপাতালে ভর্তি করেন।
জাহিদুলের বাবা ও মা জানান, নির্যাতনের পরও অভিযুক্তরা হুমকি দিতে থাকে। থানায় অভিযোগ জানালে মেয়েকে এসিড দিয়ে ঝলসে দেয়া ও ছেলেকে হত্যার হুমকি দেয়া হয় বলে জানান তারা। ফলে পরিবারটি চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে।
ঘটনার পর থেকেই প্রধান অভিযুক্ত তুহিন ও যুবদল নেতা ইমন তালুকদারসহ অন্যরা পলাতক। তুহিনের বাবা মো. বেল্লাল হোসেন বলেন, ‘ঘটনার বিষয়ে আমি কিছু জানি না। ছেলেও বাড়িতে নেই। পরে বিস্তারিত জানাতে পারব।’
চরফ্যাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিজানুর রহমান হাওলাদার বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে বিষয়টি যাচাই করেছে। এখনও পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’